ডেস্ক রিপোর্ট : ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৪ ধারা অনুযায়ী বিচারিক আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের রায়ে হাই কোর্টের অনুমোদন লাগে; যা ডেথ রেফারেন্স হিসেবে পরিচিত।
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় বোমা পেতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্র ও রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় ১৪ আসামির সবাইকে মঙ্গলবার মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে ঢাকার একটি আদালত।
সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র ও হাই কোর্ট বিভাগের বিশেষ কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সোমবার বিকেলে এ মামলার রায়সহ ডেথ রেফারেন্স হাই কোর্টে আসে। এখন তা হাই কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় পাঠানো হবে। যাচাই-বাছাইয়ের পর পেপারবুক তৈরির জন্য এসব নথি বিজি প্রেসে পাঠানো হবে।”
গত ২৩ মার্চ ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে ১৪ আসামির সবাইকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মো. আজিজুল হক ওরফে শাহনেওয়াজ (পলাতক), মো. লোকমান (পলাতক), মো. ইউসুফ ওরফে মোছহাব মোড়ল (পলাতক), মোছহাব হাসান ওরফে রাশু (পলাতক), মো. আনিসুল ইসলাম, সারোয়ার হোসেন মিয়া, শেখ মো. এনামুল হক (পলাতক), মো. মফিজুর রহমান ওরফে মফিজ, মো. মাহমুদ আজহার ওরফে মামুনুর রশিদ, মো. রাশেদুজ্জামান ওরফে শিমুল, মো. তারেক হোসেন, মো. ওয়াদুদ শেখ ওরফে গাজী খান, মাওলানা আমিরুল ইসলাম ওরফে জেন্নাত মুন্সী এবং মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান।
দণ্ডিতরা সবাই নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী বাংলাদেশের (হুজি-বি) নেতা-কর্মী। ফায়ারিং স্কোয়াডে প্রকাশ্যে তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে বলা হয়েছে রায়ে। কোনো কারণে তা সম্ভব না হলে প্রচলতি নিয়মে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে বলেছেন বিচারক।
২০০০ সালের ২০ জুলাই কোটালীপাড়ায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশস্থলের পাশে ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে রাখা হয়। শেখ লুৎফর রহমান মহাবিদ্যালয়ের উত্তর পাশের একটি চায়ের দোকানের পেছন থেকে এ বোমা বিস্ফোরণের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল।
ওই ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা, হত্যার ষড়যন্ত্র এবং বিস্ফোরক আইনে কোটালীপাড়া থানায় তিনটি মামলা করে পুলিশ।
এর মধ্যে হত্যাচেষ্টা মামলায় ২০১৭ সালের ২০ অগাস্ট নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন দল জিহাদ আল ইসলামী বাংলাদেশের (হুজি-বি) দশ নেতাকর্মীকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয় ঢাকার একটি দ্রুত বিচার ট্রাইবুনাল।
গত ১৭ ফেব্রুয়ারি আপিলের রায়ে ১০ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে হাই কোর্ট। যাবজ্জীবন সাজার এক আসামি এবং ১৪ বছর কারাদণ্ডের দুই আসামির সাজা বহাল রাখা হলেও আরেক আসামিকে খালাস দেয় হাই কোর্ট।
আর হত্যার ষড়যন্ত্রের এ মামলায় ২০০১ সালের ১৫ নভেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। আদালত ২০০৪ সালে ১৪ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে।
রাষ্ট্রপক্ষে ৫০ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩৪ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হলে ১১ মার্চ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়। সেই শুনানি শেষে বিচারক গত ২৩ মার্চ রায় ঘোষণা করেন।
Design & Developed BY- zahidit.com
Leave a Reply